একটি শিশু জন্মের পরই তাকে সুস্থ রাখতে নানা ধরনের টিকা দেওয়া হয় এবং পুরো বিশ্বজুড়েই শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম চলে। শিশুদের জীবন রক্ষায় দেওয়া নানা টিকার তালিকায় কি এবার কোভিড-১৯ টিকা যুক্ত করার সময় হয়েছে?
যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে শিশুদের কোভিড-১৯ টিকা দিতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্য সরকার দেশটির ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ছয় লাখ শিশুকে এরইমধ্যে কোভিড-১৯ টিকা দিয়েছে। আগামী বছর দেশটি এর থেকেও কম বয়সের শিশুদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছে। এজন্য তারা কোভিড টিকার নিরাপত্তা নিয়ে আরো তথ্য হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
যুক্তরাজ্যে এখনো প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সরকার আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সব প্রাপ্ত বয়স্ককে টিকার প্রথম ডোজ দিতে চাইছে। তবে শিশুদের বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকার থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
কোভিড টিকা কি শিশুদের জীবন রক্ষা করবে?
বৈজ্ঞানিক ভাবেই এখন এই প্রশ্ন উঠছে- কোভিড-১৯ টিকা কী আসলেই শিশুদের জীবন রক্ষা করতে পারবে। এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বেশ জটিল।
কারণ, এক এক দেশের ক্ষেত্রে এ প্রশ্নের উত্তর এক এক রকম হবে। এক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। শিশুদের টিকা দেওয়া উচিত হবে নাকি ওই টিকা অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে ওইসব দেশের স্বাস্থ্যকর্মী ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের দিলে তাতে বেশি জীবন রক্ষা পাবে সেটা বিবেচনা করা উচিত। এখন পর্যন্ত শিশুদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া বা মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক কম।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ভ্যাক্সিনেশন অ্যান্ড ইমুনাইজেশন কমিটির সদস্য অধ্যাপক অ্যাডাম ফিন বলেন, ‘‘সৌভাগ্যজনক ভাবে এই মহামারীর মধ্যেও অল্প কিছু ভালো জিনিসের একটি হচ্ছে, শিশুদের বেলায় এই ভাইরাসে মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল।”
সংক্রমিত হলেও শিশুদের শরীরে রোগের উপসর্গ খুবই কম থাকে বা একেবারে থাকেই না। সেই তুলনায় বয়স্কদের শরীরে রোগের উপসর্গ অনেক বেশি দেখা যায় এবং মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। তাই তাদের আগে টিকা দেওয়া উচিত।
বিবিসি জানায়, শিশুদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সাত দেশে গবেষণা চালানো হয়েছে। লানসেট ম্যাগাজিনে ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহামারীতে প্রতি ১০ লাখ শিশুর মধ্যে দুই জনের কম শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।