গত ২৪ মার্চ রোজ রোববার সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টার দিকে হঠাৎ ঝড়ের তান্ডবে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় সারাদেশের মানুষ। বরিশাল ও লক্ষ্মীপুর জেলার মেঘনা নদীর অংশে লঞ্চ ও নৌকা ডুবির ঘটনাও ঘটে। এতে বহু মানুষ হতাহত হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
৬৫ বছর বয়সী এমনই এক ব্যাক্তির খোঁজ পাওয়া যায়। যার নাম খোরশেদ আলম শিকদার। তার বাড়ী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশীর রকাছিয়া গ্রামে।
জানা যায়, গত ২৩ মার্চ লক্ষ্মীপুর রায়পুরের চরকাছিয়া থেকে ইট আনার উদ্দেশ্যে ট্রলার যোগে বরিশাল যান খোরশেদ শিকদার। পরদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেখান থেকে ইট বোঝাই করে ট্রলারটি রায়পুরের চরকাছিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে হঠাৎ মাঝ নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে। মূহুর্তের মধ্যে আকষ্মিক এই ঝড়ে মাঝিসহ ট্রলারটি নিখোঁজ হয়।
এতে ট্রলারে থাকা নৌকার মাঝির হদিস না পাওয়ায় নিখোঁজ ব্যাক্তির স্বজনরা উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসেনি কেউই।
পরে নিখোঁজ ব্যাক্তির স্বজনরা ব্যাক্তিগত উদ্যোগে উদ্ধার কাজে নেমে পড়েন। এতে রায়পুর উপজেলার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এক যুব সদস্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। যার নাম আলী আজগর রবিন।
নিখোঁজের ৭২ ঘন্টা পর সন্ধান মেলে খোরশেদ শিকদারের। ততক্ষণে খোরশেদ শিকদার লাশ হয়ে মেঘনা নদীতে ভাঁসতে থাকেন। রবিনের সহযোগীতায় মেঘনার বুক থেকে খোরশেদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয় খোরশেদকে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন উপজেলা প্রশাসন থেকে জনসাধারণের মাঝে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কোনো সতর্ক বার্তা প্রচার কর হয়নি। যার কারণে নৌ চলাচল স্বাভাবিক ছিল। প্রায় সময়ই এমন ঘটনা ঘটে। কিছু দিন পর পর মেঘনা নদীতে লাশ পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা করত উপকূলীয় এলাকায় কোনো নৌ পুলিশ বা উদ্ধার কেন্দ্র থাকলে এরকম হতো না। উপজেলা প্রশাসনের অবহেলায় অনেকের জীবন মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে মন্তব্য করেন তারা।
এ ব্যাপারে উদ্ধার কর্মী রবিন জানান, রায়পুরে মেঘনা নদীতে নৌ পুলিশ না থাকায় উদ্ধার কাজ কঠিন হয়ে গেছে। মৃত ব্যাক্তি সম্পর্কে আমার মামা হন।প্রাকৃতিক দূর্যোগের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন তথ্য না থাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। নিখোঁজের ঘটনা জানার পরই রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য হিসেবে আমি উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করি। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সব সময়ই মানব সেবায় এগিয়ে আসে।
উল্লেখ্য রায়পুর উপজেলায় মেঘনা নদীর অংশে নৌ পুলিশ ক্যাম্প নেই। লক্ষ্মীপুর সদর নৌ পুলিশ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।